;
টেকনিক্যাল এনালাইসিস মূলত একটি শেয়ারের দামের পরিবর্তন (Price Movement) এবং গতিপ্রকৃতি লক্ষ্য করে ভবিষ্যতে একটি শেয়ারের মূল্য কেমন হতে পারে সেই বিষয়টি অনুমান করা। একজন এনালিস্ট সাধারণত চার্ট ব্যবহার করে একটি বাজারের দামের পরিবর্তন (Price Movement) বোঝার চেষ্টা করে থাকেন । এই চার্টের মাধ্যমে আসলে আপনি বিভিন্ন ধরনের প্যাটার্ন (Pattern) এবং ট্রেন্ড (Trend) বুঝতে পারবেন যা আপনার বিনিয়োগের সুযোগ গুলো আরও বাড়িয়ে দিবে । এক কথায় বলা যায় টেকনিক্যাল এনালাইসিসে মুল্যের (Price) গতিই পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং চার্ট-ই হচ্ছে এর প্রাথমিক উপাদান । অন্যভাবে বলা যায় টেকনিক্যাল এনালাইসিস = চার্ট।
আধুনিক Technical Analysis এর সুত্রপাত হচ্ছে Dow Theory থেকে যা প্রায় ১৯০০ সালে চার্লস ডাউ করে দিয়ে গেছেন । এখন পর্যন্ত সেই থিওরিই বিশ্ব জুড়ে ব্যবহার করা হয় টেকনিক্যাল এনালাইসিসে । ডাউ জ়োন্স এর Industrial Average পৃথিবী জুড়ে সমাদৃত যা এই ডাউ থিওরি থেকেই আনুসৃত।
টেকনিক্যাল এনালাইসিস শেয়ার বাজারের তিনটি নীতির উপর নির্ভরশীলঃ
১. মূল্য সবকিছুকে বিবেচনায় নেয়ঃ একটি প্রতিষ্ঠানের যদি আর্থিক অবস্থা ভালো থাকে এবং ভালো মুনাফা করে তবে আশা করা যায় সেই প্রতিষ্ঠানটি ভালো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে। আবার যদি দেখেন একটি প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি অনেক বেড়ে গেছে তবে কি হবে? অবশ্যই সেই প্রতিষ্ঠানের মুনাফা বাড়বে। এই সব কিছুর প্রভাব কিন্তু সেই শেয়ারটির দামের ওপর পড়বে। অর্থাৎ বলা যায় মূল্য সব কিছুকে বিবেচনায় নেয়। আর এই টেকনিক্যাল এনালাইসিসে আমরা এই মূল্য নিয়েই কাজ করে থাকি।
২. মূল্য তার ট্রেন্ডকে অনুসরন করেঃ মূল্য অর্থাৎ Price সব সময়ই একটি ট্রেন্ড অনুসরণ করে চলে। একটি শেয়ারের মূল্য সাধারণত ঊর্ধ্বমুখী, নিন্মমুখী এবং সমান্তরাল ভাবে চলতে পারে।
৩. মূল্যের পুনরাবৃত্তি ঘটেঃ শেয়ার বাজারে একটি শেয়ারের দাম অর্থাৎ মূল্যর প্রায় পুনরাবৃত্তি ঘটে থাকে। ফলে অতীত দেখে ভবিষ্যতের ধারনা পাওয়া যায় ।
শেয়ারের মূল্য নির্ধারনের ক্ষেত্রে অনেক সময় কত দামে শেয়ার বিক্রি করা উচিত তার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে অনান্য বিনিয়োগকারীরা সেটা কত দামে বিক্রি করতে চায়। তার মানে এই নয় যে শেয়ারের দাম কত হওয়া উচিত এটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় নয়। এখানে শেয়ারের ভবিষ্যত মূল্য সম্পর্কৃত একটি শক্ত ঐক্যমত রয়েছে যা প্রায় আধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা এড়িয়ে যেতে পারেনা । টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মাধ্যমে প্রত্যেকটি শেয়ারের অতীত মূল্য বিশ্লেষণ করে আমরা ভবিষ্যতের সম্ভাব্য মূল্য নির্ধারণ করতে পারি। এর মাধ্যমে বর্তমান মূল্যের সাথে অতীত মূল্যের তুলনা করে আমরা একটি সম্ভাব্য ফলাফল ও পেতে পারি। বিশ্লেষকরা সম্ভবত এই প্রক্রিয়াকে অতীতের পুনরাবৃত্তি বলতে পারেন।
তথ্যসূত্রঃ সংগৃহীত